সুকুমার রায়ের ‘ছায়াবাজি' ছড়া-কবিতাটি আবোল তাবোল থেকে সংকলন করা হয়েছে। তার ছড়ার অদ্ভুত জগতের মতো এখানেও অনেক আজগুবি কথা বলেছেন। যদিও তিনি বলছেন তা মোটেও আজগুবি নয়। তবুও কবির কথা বিশ্বাস হতে চায় না। সত্যি, ছায়ার সঙ্গে কি কুস্তি করা যায়? কবি বলছেন, রোদের ছায়া, চাঁদের ছায়া, বকের ছায়া, চিলের ছায়া, হাল্কা মেঘের পাসে ছায়া, শুকনো ছায়া, ভেজা ছায়া-এ রকম অসংখ্য ছায়া ধরে তিনি ব্যবসা ফেঁদেছেন। এই ছায়াবাজি বা ছায়ার ব্যবসা অবাস্তব নিশ্চয়। এই ছায়াগুলো অসুখেরও মহৌষধ! অনিদ্রা দূর করতে নিম ও ঝিঙের ছায়া; সর্দিকাশি সারাতে চাঁদের আলোয় পেঁপের ছায়া; পঙ্গু লোকের নতুন করে পা জন্মাতে আমড়ার নোংরা ছায়া যদি খাওয়া যায় তা হলে এর কোনো তুলনা নেই ! কবি তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছায়া যত্নের সঙ্গে তুলে রাখেন; কিছু সর্বসাধারণের কল্যাণার্থে নির্ধারিত মূল্যে বিতরণের জন্য রাখেন। আসলে এটি একটি রূপক কবিতা। ছায়া এখানে শিল্পের অমরাত্মা হিসেবে বিবেচিত। চটুল ভাব ও পণ্ডশ্রমের ভেতরেও যে জীবনের গভীর সত্য নিহিত থাকতে পারে কবিতায় তা-ই প্রতিভাত হয়েছে।
আরও দেখুন...